গন্ডারের মধ্যে ফিতাকৃমির


গন্ডারের মধ্যে ফিতাকৃমির সংক্রমণ নিয়ে উদ্বেগ জলদাপাড়ায়, একই উপসর্গ নিয়ে আগষ্ট মাসেই ৪ টি গন্ডারের মৃত্যু:
আলিপুরদুয়ার:-

অ্যানোপ্লোসেফালা টেপওয়ার্ম সংক্রমণের জন্য আগস্ট মাসেই ৪টি গন্ডারের মৃত্যু হয় জলদাপাড়া জাতীয় উদ্যানে। তিন থেকে পাঁচ বছরের মধ্যে বয়সি এই গন্ডারগুলির একই ধরনের উপসর্গ ছিল।এর ফলে গভীর উদ্বেগ ছড়িয়েছে বনদপ্তর এর অন্দরে।

মোকাবিলায় বন্যপ্রাণী চিকিৎসকদের পাঁচ জনকে নিয়ে একটি মনিটরিং টিম গঠন করেছে জলদাপাড়া বন বিভাগ।

প্রসঙ্গত গত ১৫ই আগস্ট স্বাধীনতা দিবসের দিন সকালে জলদাপাড়ার উত্তর রেঞ্জের জঙ্গলের জলাভূমিতে আটকে পড়া অবস্থায় একটি গন্ডার শাবককে দেখতে পায় টহলরত বন কর্মীরা। এরপর সেই অসুস্থ গন্ডার শাবককে বাঁচাতে এক অদম্য লড়াই করে বাঁশের মাচা তৈরী করে সেটিতে চাপিয়ে জলাভূমির বাইরে নিয়ে আসেন একদল বনকর্মী। এরপর গন্ডার শাবকটিকে কাছেই একটি নজর মিনারে রেখে চিকিৎসা শুরু করা হয়। যদিও বন্যপ্রাণী চিকিৎসক উৎপল শর্মা সেদিন জানিয়েছিলেন 'আমরা আপ্রাণ চেষ্টা করছি। কিন্তু প্রাকৃতিক নিয়মে গন্ডার অথবা হাতির মতো বড় দেহের প্রাণী একবার বসে অথবা শুয়ে পড়লে তাদের বাঁচার সম্ভাবনা কমে আসে।' তার কথা কে সত্যি প্রমান করে বুধবার ভোর বেলা মৃত্যু হয় ওই শাবকের। যা একই রকম উপসর্গ ছিল।

বিশেষজ্ঞরা ব্যাখ্যা করেন যে অ্যানোপ্লোসেফালা টেপওয়ার্মের জীবনচক্র বিভিন্ন পর্যায়ে জড়িত। সংক্রামিত গন্ডাররা যেখানে মলত্যাগ করে সেই জায়গায় এই বিশেষ ধরনের ফিতা কৃমির ডিম জমা হতে শুরু করে। কারণ একটি গন্ডার কমপক্ষে টানা দু'মাস একই জায়গায় মলত্যাগ করে।টেপওয়ার্ম এর ডিমগুলি এরপরে এক ধরনের প্রকার শরীরে মিশে গিয়ে নিজেদের জীবন চক্র সম্পূর্ণ করে। ওই পোকারা ঝোপজঙ্গলে ডিম পাড়তে এলে, সেই সঙ্গে ফিতাকৃমিও বেরিয়ে আসে। গন্ডাররা সেখানে খাস খেতে এলে গন্ডারের পাকস্থলীতে গিয়ে ফিতাকৃমি অনেকটা সময় নিয়ে বংশবিস্তার করতে শুরু করে।প্রায় দুই থেকে আড়াই বছর সময় লেগে যায় এই বংশবিস্তার করতে। ফলে সংখ্যায় বেড়ে যাওয়ার পর ফিতাকৃমি গন্ডারের পেটে আলসার সৃষ্টি করে ওইভাবে গন্ডারের মতো বড় বন্যপ্রাণীকে ভিতর থেকে ঝাঁঝরা করে দেয়।এবং শেষ পর্যন্ত আক্রান্ত গন্ডারের মত বড় বন্যপ্রাণীকে পঙ্গু করে দেয় এবং মৃত্যুর দিকে নিয়ে যায়।

জলদাপাড়া জাতীয় উদ্যানের সহকারী বন্যপ্রাণী সহায়ক নভোজিৎ দে জানান "স্বল্প সময়ের মধ্যে জলদাপাড়ায় সমস্ত গন্ডারকে কৃমিনাশক করা অসম্ভব। ঠিক তেমনিই ওষুধ নির্বাচন করাটাও জরুরী।আমরা আপাতত প্রাথমিকভাবে প্যাসিকুইন্টল' এবং 'অক্সাবেন্ডাজল, নামে দুটি কৃমিনাশক ঔষধ কে নির্বাচন করেছি। কিন্তু 'প্যাসিকুইন্টল' ওষুধটি গর্ভবতী গন্ডারের জন্য ঝুঁকি তৈরি করে, তাই আমরা এখন 'অক্সাবেন্ডাজল'-এর দিকেই ঝুকেছি, কারণ এই ওষুধটি অনেক নিরাপদ ও যথাযথ ওষুধ। কিন্তু এখানেও সমস্যা কম নয়। কারণ ডোজটা ঠিক কত পরিমান হবে, তা নিয়ে গন্ডার বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ নেওয়া জরুরি। তারপর অসীম ধৈর্য নিয়ে মাঠে নামতে হবে। কোন কোন গন্ডারকে কৃমির ওষুধ খাওয়ানো হলো, তাদের চিহ্নিত করার প্রশ্নও আছে। সব মিলিয়ে এই পরিকল্পনা একটি দীর্ঘমেয়াদী কাজ। কঠিন কাজ। তা সত্ত্বেও আমাদের সেই গন্ডারের মধ্যে ফিতাকৃমির সংক্রমণ নিয়ে উদ্বেগ জলদাপাড়ায়, একই উপসর্গ নিয়ে আগষ্ট মাসেই ৪ টি গন্ডারের মৃত্যু:-

শুভদীপ বর্মন,
আলিপুরদুয়ার:-

অ্যানোপ্লোসেফালা টেপওয়ার্ম সংক্রমণের জন্য আগস্ট মাসেই ৪টি গন্ডারের মৃত্যু হয় জলদাপাড়া জাতীয় উদ্যানে। তিন থেকে পাঁচ বছরের মধ্যে বয়সি এই গন্ডারগুলির একই ধরনের উপসর্গ ছিল।এর ফলে গভীর উদ্বেগ ছড়িয়েছে বনদপ্তর এর অন্দরে।

মোকাবিলায় বন্যপ্রাণী চিকিৎসকদের পাঁচ জনকে নিয়ে একটি মনিটরিং টিম গঠন করেছে জলদাপাড়া বন বিভাগ।

প্রসঙ্গত গত ১৫ই আগস্ট স্বাধীনতা দিবসের দিন সকালে জলদাপাড়ার উত্তর রেঞ্জের জঙ্গলের জলাভূমিতে আটকে পড়া অবস্থায় একটি গন্ডার শাবককে দেখতে পায় টহলরত বন কর্মীরা। এরপর সেই অসুস্থ  গন্ডার শাবককে বাঁচাতে এক অদম্য লড়াই করে  বাঁশের মাচা তৈরী করে সেটিতে চাপিয়ে জলাভূমির বাইরে নিয়ে আসেন একদল বনকর্মী। এরপর গন্ডার শাবকটিকে কাছেই একটি  নজর মিনারে রেখে চিকিৎসা শুরু করা হয়। যদিও বন্যপ্রাণী চিকিৎসক উৎপল শর্মা সেদিন জানিয়েছিলেন 'আমরা আপ্রাণ চেষ্টা করছি। কিন্তু প্রাকৃতিক নিয়মে গন্ডার অথবা হাতির মতো বড় দেহের প্রাণী একবার বসে অথবা শুয়ে পড়লে তাদের বাঁচার সম্ভাবনা কমে আসে।' তার কথা কে সত্যি প্রমান করে বুধবার ভোর বেলা মৃত্যু হয় ওই শাবকের। যা একই রকম উপসর্গ ছিল।

বিশেষজ্ঞরা ব্যাখ্যা করেন যে অ্যানোপ্লোসেফালা টেপওয়ার্মের জীবনচক্র বিভিন্ন পর্যায়ে জড়িত। সংক্রামিত গন্ডাররা যেখানে মলত্যাগ করে সেই জায়গায় এই বিশেষ ধরনের ফিতা কৃমির ডিম জমা হতে শুরু করে। কারণ একটি গন্ডার কমপক্ষে টানা দু'মাস একই জায়গায় মলত্যাগ করে।টেপওয়ার্ম এর ডিমগুলি এরপরে এক ধরনের প্রকার শরীরে মিশে গিয়ে নিজেদের জীবন চক্র সম্পূর্ণ করে। ওই পোকারা ঝোপজঙ্গলে ডিম পাড়তে এলে, সেই সঙ্গে ফিতাকৃমিও বেরিয়ে আসে। গন্ডাররা সেখানে খাস খেতে এলে গন্ডারের পাকস্থলীতে গিয়ে ফিতাকৃমি অনেকটা সময় নিয়ে বংশবিস্তার করতে শুরু করে।প্রায় দুই থেকে আড়াই বছর সময় লেগে যায় এই বংশবিস্তার করতে। ফলে সংখ্যায় বেড়ে যাওয়ার পর ফিতাকৃমি গন্ডারের পেটে আলসার সৃষ্টি করে ওইভাবে গন্ডারের মতো বড় বন্যপ্রাণীকে ভিতর থেকে ঝাঁঝরা করে দেয়।এবং শেষ পর্যন্ত আক্রান্ত গন্ডারের মত বড় বন্যপ্রাণীকে পঙ্গু করে দেয় এবং মৃত্যুর দিকে নিয়ে যায়।

জলদাপাড়া জাতীয় উদ্যানের সহকারী বন্যপ্রাণী সহায়ক নভোজিৎ দে জানান "স্বল্প সময়ের মধ্যে জলদাপাড়ায় সমস্ত গন্ডারকে কৃমিনাশক করা অসম্ভব। ঠিক তেমনিই ওষুধ নির্বাচন করাটাও জরুরী।আমরা আপাতত প্রাথমিকভাবে প্যাসিকুইন্টল' এবং 'অক্সাবেন্ডাজল, নামে দুটি কৃমিনাশক  ঔষধ কে নির্বাচন করেছি। কিন্তু 'প্যাসিকুইন্টল' ওষুধটি গর্ভবতী গন্ডারের জন্য ঝুঁকি তৈরি করে, তাই আমরা এখন 'অক্সাবেন্ডাজল'-এর দিকেই ঝুকেছি, কারণ এই ওষুধটি অনেক নিরাপদ ও যথাযথ ওষুধ। কিন্তু এখানেও সমস্যা কম নয়। কারণ ডোজটা ঠিক কত পরিমান হবে, তা নিয়ে গন্ডার বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ নেওয়া জরুরি। তারপর অসীম ধৈর্য নিয়ে মাঠে নামতে হবে। কোন কোন গন্ডারকে কৃমির ওষুধ খাওয়ানো হলো, তাদের চিহ্নিত করার প্রশ্নও আছে। সব মিলিয়ে এই পরিকল্পনা একটি দীর্ঘমেয়াদী কাজ। কঠিন কাজ। তা সত্ত্বেও আমাদের সেই কঠিন কাজটা করতেই হবে। না হলে আমাদের বিভিন্ন সমস্যায় পড়তে হবে।

জলদাপাড়ায় ওই গন্ডারের  মৃত্যুর ঘটনা জেনে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন ইন্টারন্যাশনাল ইউনিয়ন ফর কনজারভেশন অফ নেচার (IUCN) এর স্পিসিস সারভাইভাল কমিশনের এশিয়ান রাইনো স্পেশালিস্ট গ্রুপের চেয়ারম্যান ডক্টর বিভাব তালুকদার। তিনি জানান বিষয়টি নিয়ে দ্রুত গন্ডার বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ নেওয়া অত্যন্ত জরুরী। কাজটা করতেই হবে। না হলে আমাদের বিভিন্ন সমস্যায় পড়তে হবে।

জলদাপাড়ায় ওই গন্ডারের মৃত্যুর ঘটনা জেনে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন ইন্টারন্যাশনাল ইউনিয়ন ফর কনজারভেশন অফ নেচার (IUCN) এর স্পিসিস সারভাইভাল কমিশনের এশিয়ান রাইনো স্পেশালিস্ট গ্রুপের চেয়ারম্যান ডক্টর বিভাব তালুকদার। তিনি জানান বিষয়টি নিয়ে দ্রুত গন্ডার বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ নেওয়া অত্যন্ত জরুরী।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ